About Course
আমরা যারা লেখালেখি করি বা করতে চাই, তাদের খুব কমন একটা সমস্যা হলো—বানানভুল। আমরা কেবল গল্প-উপন্যাস-প্রবন্ধ লিখি; কিন্তু যা লিখি, তা মাঝে মাঝে বিরক্তিকর হয়ে উঠতে পারে কেবলই ভুল বানানের জন্য। ধরেন আপনি একটা ঘর বানাতে চান, ইটের ওপর ইট রেখে চারপাশে চারটা দেওয়াল বানিয়ে তার ওপর একটা ছাউনি দিয়ে ঘর বানিয়ে ফেললেন; তবে আপনার ঘরের দেওয়ালের ইটগুলো বসানো হয়েছিল এবড়ো-থেবড়োভাবে। হ্যাঁ, ঘর একটা হয়েছে ঠিকই, তবে সেটার সৌন্দর্য নষ্ট হয়েছে। ঠিক একইভাবে, ভুল বানানও একটা লেখার সৌন্দর্য নষ্ট করে। আর, সাহিত্যের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্যই হলো—সৌন্দর্যসৃষ্টি; সেই সৌন্দর্যটাই যদি ক্ষুণ্ণ হয় সাহিত্য করতে গিয়ে, তা হলে সাহিত্যের উদ্দেশ্যের সার্থকতা থাকল কোথায়?
সাহিত্যচর্চার অন্যতম প্রধান শর্ত—শুদ্ধ বানানে লেখা। সাহিত্যে প্রবেশের ব্যাপারে আমাদের আগ্রহ থাকলেও, শুদ্ধ বানান শেখার ব্যাপারে অনেকেই উদাসীন। আমরা যত বেশি সাহিত্যপ্রবণ, তত বেশি শুদ্ধ বানানবিমুখ।
লেখালেখি করতে গিয়ে আমরা প্রায়শই যেসব বানান ভুল করি, বা যেসব বানান নিয়ে প্রায়ই ভুগতে হয় সমূহ সংশয় ও বিবিধ বিড়ম্বনায়, সেসব বানান মনে রাখার নিয়ম ও বিভিন্ন প্রকার শব্দের সঠিক বানান শেখার জন্য জাগরণ একটি কোর্স আনতে যাচ্ছে।
কী কী থাকবে এই কোর্সে?
• শব্দে জব্দ : এই অংশে আলোচনা করা হবে এমন কিছু শব্দ নিয়ে, যেগুলোর সঠিক রূপ নিয়ে আমরা প্রায়ই দ্বিধাবিভক্ত হয়ে পড়ি। মাঝে মাঝে একটির জায়গায় অন্যটিকে ব্যবহার করে ফেলি, কখনও বা বুঝেই উঠতে পারি না যে কোনটি আসলে ঠিক, আর কেনই বা ঠিক। মাঝে মাঝে না বুঝেই সাধুভাষার শব্দকে লিখে ফেলি চলিতভাষার প্রবন্ধে, এক কালের বর্ণনার মধ্যে লিখে ফেলি অন্য কালের ক্রিয়া। যে শব্দগুলো আমাদেরকে নিয়মিত জব্দ করে ছাড়ে, তাদেরকে নিয়েই কোর্সের এই অংশটুকু। এ ছাড়াও, এখানে বেশকিছু সূত্র শিখব আমরা, বানান মনে রাখার সূত্র। সূত্র শিখে নিলে আর কখনোই বানান ভুল হবে না।
• কোথায় কোন কার : কার-সংক্রান্ত ভুলের মধ্যে বিশেষ করে ও-কার এবং ই/ঈ-কারের ভুলই বেশি চোখে পড়ে। এমন অনেক বানানের সাথেই আমরা দিব্যি অভ্যস্ত হয়ে গিয়েছি যেটা আদতে মোটেও সঠিক বানান নয়। কারের সঠিক ব্যবহার মনে রাখার বেশ কিছু নিয়ম শেখানো হবে এই অংশে।
• কোনটি কোথায় : কিছু শব্দ আছে যাদের উচ্চারণ প্রায় কাছাকাছি, হয়তো বানান একটু আলাদা; বানানে সামান্য একটু পরিবর্তন আনলেই শব্দটার অর্থ বদলে যায়, যেমন—চন্দ্রবিন্দু দিলে এক অর্থ দাঁড়ায়, চন্দ্রবিন্দু না দিলে হয়ে যায় অন্য অর্থ; ও-কার দিলে এক অর্থ, না দিলে অন্য অর্থ। মাঝে মাঝে আমরা একটির জায়গায় অন্যটিকে ব্যবহার করে ফেলি, যার ফলে অর্থবিভ্রান্তি দেখা দেয়। এমন ভুল যেন না হয়, কোন শব্দটি দ্বারা কী বোঝায় এবং কোথায় তা ব্যবহার করলে শুদ্ধ হবে, এগুলোই শেখানো হবে কোর্সের এই অংশে।
• যতিচিহ্নের ব্যবহার : লেখালেখি হোক আর যা-ই হোক, সঠিকভাবে যতিচিহ্ন ব্যবহার করতে না জানলে একে তো সুন্দরভাবে উপস্থাপন করা যায় না, মাঝে মাঝে তা অর্থবিভ্রান্তিরও উপক্রম ঘটায়। তাই, সঠিকভাবে যতিচিহ্নের ব্যবহার শেখাটাও জরুরি। এই চিন্তা মাথায় রেখে যতিচিহ্নের ব্যবহারকেও কোর্সের অন্তর্ভুক্ত করা হয়েছে।
• আগে-পিছে কাছে-দূরে : কিছু শব্দ আছে যা অন্য শব্দের আগে বা পরে বসতে পারে, আগে বসলে এক অর্থ দেয়, পরে বসলে দেয় ভিন্ন অর্থ। আবার কিছু শব্দ অন্য শব্দের আগে/পিছে যুক্ত হয়েও বসে, আবার মুক্তভাবেও বসে। কোনটি কীভাবে (যুক্তভাবে না মুক্তভাবে) বসবে, আগে না পরে বসবে—এগুলো খুব সুন্দর ডায়াগ্রামের মাধ্যমে উপস্থাপন করা হয়েছে।
• বহুল প্রচলিত ভুল : কিছু ভুল শব্দ বারবার ব্যবহার করতে করতে সেটার সাথে আমরা এতটাই অভ্যস্ত হয়ে পড়েছি যে, কেউ যদি বলে—ওটা ভুল শব্দ, আমরা পারলে তার গলা টিপে ধরি! তবে যেটা ভুল, সেটা ভুলই; রেগে গেলে লাভ নেই। এরকমই কিছু বহুল প্রচলিত ভুল শব্দ ও তার শুদ্ধ রূপ এবং সেটা কেন ভুল/শুদ্ধ তা আলোচনা করা হয়েছে এই অংশে। সেই সাথে আরও কিছু অশুদ্ধ শব্দ ও তার শুদ্ধ রূপের একটা শিট দিয়ে দেওয়া হবে।
এ ছাড়াও কোর্সের ভিডিয়ো টিউটোরিয়ালগুলোর সাথে কিছু কিছু নোট দেওয়া হবে, মাঝে মাঝে এমসিকিউ পরীক্ষাও নেওয়া হবে; থাকবে যেকোনো বিষয় নিয়ে প্রশ্ন করার ও যুক্তিসম্মত আলাপ-আলোচনা করার সার্বক্ষণিক সুব্যবস্থা।
কাদের জন্য এই কোর্স?
– যারা লেখক হতে চান, তবে শুদ্ধভাবে শব্দ লিখতে পারেন না; অনেকে জানেনও না যে তিনি আদৌ ভুল করছেন কি না, করলেও ঠিক কোথায় কী ভুল করছেন; কিংবা যারা লেখালেখি করেন, এমনকি বইও বের হয়েছে, তবে প্রুফ রিডিং-এর জন্য আলাদা করে কড়ি ঢেলে প্রুফ রিডারের দরবারে ধরনা দেন; সবার জন্য এই কোর্স।
– যারা সম্পাদনা করেন বা সম্পাদক হতে চান, তাদেরও শুদ্ধভাবে শব্দ ও যতিচহ্নের ব্যবহার জানতে হয়। কাজেই, তাদের জন্যও কোর্সটা উপযোগী হবে।
– আপনি যদি নবম-দশম ও একাদশ-দ্বাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী হন, তা হলে বাঙলা দ্বিতীয় পত্রের অনেক বড়ো একটা অংশ জেনে যাবেন এই কোর্স করার মাধ্যমে। কাজেই, আপনি যদি চান এক কি দুই মাস বাঙলা স্যারের কাছে পড়বেন না, এবং তাকে যে পেমেন্ট দেওয়া হয়, তার চেয়ে অনেক কম মূল্যে জাগরণের কোর্সটি করে ফেলবেন; তা হলে অর্থেরও সাশ্রয় হবে!
– আপনি যদি স্রেফ ফেসবুকে পোস্টও দিতে চান, তবু এই কোর্স করার আপনার জন্য বাধ্যতামূলক। কেননা, আপনি যখন লিখবেন—‘আমার মনটা লেখক হতে চাই। বিভিন্ন গ্রুপে লিখালিখি করে পুরষ্কার পেলে কত্ত ভাল হত?’—তখন লোকে বলবে—সোনা, দুটো বাক্য লিখতে গিয়ে ছয়টা ভুল করে বসে আছ; তোমার আর লিখে কাজ নেই, তুমি পড়তে বসো। হ্যাঁ, এ দুটো বাক্যে ছয়টা ভুল আছে। কী কী ভুল বলেন তো? বলতে না পারলে বুঝে নেন আপনার জন্যই এই কোর্স!
Course Content
Module 01
Lesson 01 | যতিচিহ্নের ব্যবহার- দাঁড়ি
05:04Lesson 02 | কোনটি কোথায়- ভাল-ভালো, কোন-কোণ-কোনো
06:00Lesson 03 | শব্দে জব্দ- ব্য-ব্যা, ই-য়, কি-কী, কিনা-কি না
24:17